নিম পাতার উপকারিতা: নিমের ইংরেজি নাম Neem, বৈজ্ঞানিক বা উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম Azadirachta indica A.Juss., পরিবার Meliaceae। নিমকে নিম্ব, ভেপা, তামার আরও আরও অনেক নামে ডাকা হয়। নিম আমাদের এক বিশেষ উপকারী বন্ধু বৃক্ষ। নিমের জনপ্রিয়তা সে অনাদিকাল থেকে চলে আসছে। নিমের পাতা থেকে বাকল, শিকড় থেকে ফুল, ফল থেকে বীজ সবগুলোই আবশ্যকীয়ভাবে কাজে লাগে। নিমের গুণ অতুলনীয়। নিম অনেক দ্রুতবর্ধনশীল গাছ। নিম বহুবর্ষজীবী মাঝারি ধরনের চিরহরিৎ বৃক্ষ। পরিপক্ব বয়সে ১৫ থেকে ২০ মিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে।
নিমের বহুবিধ গুণের কথা আমরা কমবেশি সবাই জানি। নিম একটি অভূতপূর্ব ঔষধি গাছ। প্রাণী ও উদ্ভিদকূলের জন্য এত উপকারী গাছ অদ্যাবধি আবিষ্কত হয়নি। এজন্য বলা হয় নিম পৃথিবীর সবচেয়ে দামি বৃক্ষ। নিমের এ গুণাগুণের কথা বিবেচনা করেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নিমকে ‘একুশ শতকের বৃক্ষ’ বলে ঘোষণা করেছে।
নিম বা ইন্ডিয়ান লাইলাক (Indian Lilec) প্রাপ্ত বয়স্ক হতে প্রায় ১০ বছর সময় লাগে। এটি হচ্ছে সাধারণ নিম। এছাড়া আরও ২ প্রকার নিম আছে যা হচ্ছে মহানিম বা ঘোড়ানিম যার উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম Melia sempervirens এটি সাধারণ নিমের মতো বহু গুণে গুণান্বিত নয়। অপরটি হলো মিঠো নিম, এটি তেমন তেতো নয়, এর উদ্ভিদতান্তিবত নাম হচ্ছে Azadirachta Siamensis এটি আমাদের দেশের পাহাড়ি অঞ্চল মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডে পাওয়া যায় এবং সবজি হিসেবেও এর বহুল ব্যবহার প্রচলিত।নিমের আছে ১৩০টি ঔষধি গুণ। ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়া নাশক হিসেবে নিম খুবই কার্যকর। আর রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও এর জুড়ি মেলা ভার।
রাসায়নিক উপাদান : নিমের ছাল, ফুল, ফল, বীজে ও তেলে বিভিন্ন ধরনের তিক্ত উপাদান যেমন: স্যাপোনিন, এলকালয়েড নিমবিডিন, নিম্বন, নিম্বিনিন, নিম্বডল, ট্রাইটারপেনয়েড, সালনিন, এজাডিরাকটিন, জৈব এসিড, মেলিয়ানোন, নিম্বোলাইড, কুয়ারসেটিন ও গ্লাইকোসাইড, ট্যানিন, মারগোসিন, এজমডারিন এসব থাকে। যা হরেক রকমের কাজে লাগে।
নিমের পুষ্টিগুণ
এক কাপ নিমপাতার পুষ্টিগত মান :
এক কাপ নিমপাতার পুষ্টিগত মান : | |
এক কাপ নিমপাতা | 35 গ্রাম |
ক্যালোরি | 45 |
প্রোটিন | 2.48 গ্রাম |
কার্বোহাইড্রেট | 8.1 গ্রাম |
ফ্যাট | 0.03 গ্রাম |
ক্যালসিয়াম | 178.5 মিলিগ্রাম |
আয়রন | 5.98 মিলিগ্রাম |
ফাইবার | 6.77 গ্রাম |
ম্যাগনেসিয়াম | 44.45 মিলিগ্রাম |
ফসফরাস | 23 মিলিগ্রাম |
পটাশিয়াম | 88.9 মিলিগ্রাম |
সোডিয়াম | 25.27 মিলিগ্রাম |
দৈনিক 35 গ্রাম নিমপাতা গ্রহণ করা যেতে পারে।
আসুন জেনে নেওয়া যাক নিমের পাতার বিস্ময়কর ২৫ টি উপকারিতা
১) ক্ষত এবং ফুসকুড়ি নিরাময়ে নিম পাতার উপকারিতা :
ত্বক পরিচর্যায় প্রাচীন যুগ থেকেই নিম পাতার ব্যবহার হয়ে আসছে। নিম তেলের মাধ্যমে তৈরি বিভিন্ন উপাদানগুলি দীর্ঘস্থায়ী ত্বকের সমস্যাগুলির চিকিৎসা করে থাকে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, নিম এবং হলুদের মিশ্রণ ত্বকের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী রোগের লক্ষ্যণগুলি নির্মূল করে। আলসার কিংবা ত্বকের যেকোনো দাগ-এর চিকিৎসা নিম দিয়ে করা হয়ে থাকে। তবে এটি কেবল মাত্র বড়দের জন্যই। শিশুদের ক্ষেত্রে এটি সরাসরি ত্বকে ব্যবহার করা ঠিক হবে না। নিমের মধ্যে থাকা অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্যগুলি ত্বকের যেকোনো জীবাণুর সংক্রমণ থেকে ত্বককে রক্ষা করতে পারে।
২) রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে নিম-এর ভূমিকা ও নিম পাতার উপকারিতা:
অত্যধিক রক্তচাপের সমস্যায় যারা ভুগছেন তাদের জন্য একটি প্রয়োজনীয় উপাদান হল নিম পাতা। নিম শরীরকে ভেতর থেকে পরিষ্কার করতে সহায়তা করে এবং রক্ত বিশুদ্ধ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নিয়মিত নিম পাতা খেলে রক্ত চলাচলের পথ প্রশস্ত হয় এবং উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকলে তা নিয়ন্ত্রিত হয়। দৈনিক খালি পেটে এক কাপ জলে মধু মিশিয়ে এবং নিম পাতার রস মিশিয়ে খাওয়া গেলে এটি শরীরের রক্ত চলাচল কে ত্বরান্বিত করতে পারে। এছাড়া দৈনিক নিমপাতা গ্রহণ করতে পারলে এটি শরীরে হরমোনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। যে কারণে যারা হরমোনের সমস্যায় ভুগছেন তাদের অনেক সময় নিমপাতার গুণসম্পন্ন ঔষধ দেওয়া হয়ে থাকে। তবে গবেষণা এখনও চলছে। নিমপাতা ব্যাবহার করার আগে অবশ্যই আপনার ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন।
৩) আলসার চিকিৎসায় নিমের ব্যবহার :
গবেষণায় দেখা গিয়েছে, নিমপাতা ব্যবহার করার ফলে আলসারের মতো সমস্যা সমাধান সম্ভব হয়েছে। এছাড়াও পেটে গ্যাসের সমস্যা কিংবা গ্যাস্ট্রিক সমস্যার সমাধান নিম পাতার ব্যবহারের ফলে কমে গেছে। যার ফলে আলসারের চিকিৎসার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে নিমের ছাল। অ্যান্টি আলসার বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন হওয়ায় এটি এ ধরনের রোগের নিরাময়ের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
৪) খুশকি তাড়ায়
পরিমাণ মতো পানি ও নিম পাতা নিয়ে সেদ্ধ করুন। যতক্ষণ না পানিটা নীল হচ্ছে। এরপর তা ঠাণ্ডা করে রাখুন। গোসলের সময় চুল শ্যাম্পু দিয়ে ধোয়ার পর এই পানি দিয়ে মাথা পরিষ্কার করুন। সেক্ষেত্রে নিম পাতার মধ্যে ব্যাকটেরিয়া নাশক ও ছত্রাক নাশক উপাদান থাকার জন্য এটি চুলের চিকিৎসায় কার্যকরী ভূমিকা গ্রহণ করে থাকে।
৫) পাকা চুল রোধ করতেঃ
পাকা চুল রোধ করতে নিম পাতার গুঁড়ো আধা কাপ দইয়ে সঙ্গে মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি প্যাক হিসাবে চুলে লাগিয়ে ২০ মিনিট পর শ্যাম্পু করে নিন।
৬) চুলের বৃদ্ধিঃ
নিম পাতার অনেক উপকারের মধ্যে রয়েছে চুলের ফলিকলকে শক্তিশালী করা এবং একই সাথে চুল পড়া কমানো। এর ফল হল সুন্দর, মজবুত এবং স্বাস্থ্যকর চুল। নিমের তেল ঘন লম্বা চুল ফিরে পেতে কাজ করে। নিম পাতার পেস্ট এবং নারকেল তেল দিয়ে তৈরি চুলের মাস্ক সপ্তাহে একদিন ট্রাই করে দেখুন। এটি চুল পড়া কমাতে এবং চুল পুনরায় বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে।
৭) চোখের সমস্যা দূর করে যা নিম পাতার উপকারিতাঃ
কিছু নিম পাতা সেদ্ধ করার পর পানিটুকু ছেঁকে পুরোপুরি ঠাণ্ডা করে নিন। এরপর সেই পানি দিয়ে চোখ ধুয়ে নিন। এতে চোখের যেকোনো ধরনের প্রদাহ, ক্লান্তি বা লালচে ভাব দূর হবে।
৮) লিভারের স্বাস্থ্যরক্ষায় নিম পাতার উপকারিতা :
লিভারের স্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে নিম গাছের ফুল গুলি। এগুলি লিভার কার্সিনোজেনেসিসে প্রতিরক্ষামূলক প্রভাব ফেলে, যার ফলে লিভারের যেকোনো ধরনের সমস্যা কিংবা জন্ডিসের সমস্যা প্রভৃতি সমস্যায় নিমপাতার ব্যবহার প্রতিরক্ষামূলক প্রভাব প্রদান করে থাকে।
৯) ব্রণ নিরাময়ে নিমের উপকারিতা
তৈলাক্ত ত্বকের অধিকারী যারা তাদের ক্ষেত্রে একটি বড় সমস্যা হল ব্রণ। তবে এক্ষেত্রে এটি নিরাময়ের জন্য হাতের কাছেই রয়েছে নিমপাতা। পাশাপাশি যে সমস্ত ব্রনর কারনে ব্রেকআউট ত্বকে দেখা যায় সে গুলির সমাধানেও নিমপাতা ব্যাবহার করতে পারে। নিম পাতা এবং হলুদের পেস্ট নিয়মিত ব্যবহার করার ফলে মুখে ব্রনর দাগ কমে যেতে সহায়তা করে এবং এটি ত্বককে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন এবং উজ্জ্বল করে তোলে। প্রয়োজনে নিম পাতা হলুদ একসাথে ব্যবহার করতে পারেন। এটি ত্বক উজ্জ্বল করতে সহায়তা করবে। এর পাশাপাশি নিমের মধ্যে রয়েছে অন্যতম ময়েশ্চারাইজিং বৈশিষ্ট্যসমূহ। যা ত্বককে খুব বেশি তৈলাক্ত না করে শুষ্কতা থেকে মুক্তি দেয় এবং ত্বকের ভারসাম্য রক্ষা করে।
১০) ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণে নিম পাতার ভূমিকা :
মশার কামড়ে সৃষ্টি হওয়া ম্যালেরিয়া আমাদের অত্যন্ত পরিচিত একটি রোগ। তবে এই রোগের জীবাণু শরীরে প্রবেশ করলে শরীর দুর্বল হয়ে ওঠে, যার ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। কিন্তু আপনি জানেন কি নিম পাতার নির্যাসে রয়েছে এক ধরনের অ্যান্টি ম্যালেরিয়াল বৈশিষ্ট্য, যা শরীরের ম্যালেরিয়ার জীবাণু বহনকারী ব্যাকটেরিয়াগুলোকে ধ্বংস করতে সহায়তা করে। ম্যালেরিয়ার চিকিৎসার ক্ষেত্রে যে ওষুধগুলো প্রয়োগ করা হয় সেই ওষুধ গুলির মধ্যে নিম পাতার ব্যবহার হতে পারে। ইনফিউশন ম্যালেরিয়া রোগের অন্যতম প্রতিকার হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ম্যালেরিয়ার চিকিৎসা ক্ষেত্রে অন্যতম উপাদান হিসেবে নিমপাতার ব্যবহার হয়ে থাকে।
১১) কানফোঁড়া সারায় নিম পাতার উপকারিতাঃ
কিছুসংখ্যক নিমপাতা গুঁড়ো করে এর সঙ্গে মধু মিশিয়ে নিন। যেকোনো ধরনের কানফোঁড়া সারাতে এই মিশ্রণের কয়েকফোঁটাই যথেষ্ট।
১২) ক্যান্সার নিরাময়ে নিমের ব্যবহার :
নিম পাতায় রয়েছে পলি স্যাকারাইডস এবং লিওমনোয়েডস নামক দুটি উপাদান যা আমাদের রক্ত থেকে ক্যান্সার এবং টিউমারেরর কোষকে ধ্বংস করতে সহায়তা করে। এর ব্যবহারে ক্যান্সারের জীবাণু আমাদের আশেপাশে আসতে পারে না। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, নিম পাতার নির্যাস প্রোস্টেট ক্যান্সারের কোষগুলোকে ধ্বংস করতে সহায়তা করে। এছাড়াও নিমপাতার মিশ্রন ক্যান্সার প্রসারণ রোধ করতেও সহায়তা করে। শরীরের অনাক্রম্যতা প্রতিক্রিয়া উন্নত করে, ফ্রি রেডিক্যাল গুলি নির্মূল করে কোষ বিভাজন এবং প্রদাহ জনিত সমস্যা গুলিতে বাধা দিয়ে ক্যান্সার চিকিৎসায় নিম পাতা সহায়তা করে থাকে। নিমপাতায় থাকে প্রোটিন গ্লাইকোপ্রোটিন নামক রোগ প্রতিরোধক উপাদান। যা শরীরে ক্যান্সারের জীবাণু ধ্বংস করতে এবং তার চিকিৎসা করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তবে দেখা গিয়েছে স্তন ক্যানসারের চিকিৎসায় নিম কার্যকর হয়েছে।
১৩) অন্যান্য ত্বকের সমস্যাও দূর করেঃ
নিমপাতা গুঁড়ো করে পেস্ট তৈরি করে তার সঙ্গে হলুদ মিশিয়ে যেকোনো ধরনের খুজলি, একজিমা, রিঙ ওয়ার্ম এবং প্রদাহজনিত ত্বকের রোগ সারানো যায়। অ্যালার্জির সমস্যা হলে নিম পাতা ভালোভাবে ফুটিয়ে স্নান করুন। অ্যালার্জি যাবে ১০০ গজ দূরে। তাছাড়া কাঁচা হলুদ সাথে নিম পাতা বেঁটে শরীরে লাগালে অ্যালার্জি কমে যাবে।
১৪) কোলেস্টেরল কমাতে নিম পাতার গুণাগুণ :
সমীক্ষায় লক্ষ্য করা গিয়েছে, রক্তের কোলেস্টেরল হ্রাস করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে নিম পাতা। যারা কোলেস্টেরলের সমস্যায় ভুগছেন তাদের ক্ষেত্রে রোজ যদি নিমপাতার রস কিংবা জলে ফুটিয়ে নিম পাতার জল গ্রহণ করা সম্ভব হয় সে ক্ষেত্রে কোলেস্টেরল মাত্রা শরীরে কমতে লক্ষ্য করা যায়।
১৫) রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়ঃ
কিছু নিমপাতা চুর্ণ করে এক গ্লাস পানির সঙ্গে মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে পান করলে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে বহুগুণ।
১৬) অজীর্ণঃ
পাতলা পায়খানা হলে ২৫-৩০ ফোঁটা নিম পাতার রস, অর্ধেক কাপ জল সঙ্গে মিশিয়ে সকাল-বিকাল খাওয়ালে অনেক উপকার পাওয়া যাবে।
১৭) কোষ্ঠকাঠিন্য সারাতেঃ
নিয়মিত সামান্য পরিমাণে নিমপাতা খেতে পারলে কোষ্ঠকাঠিন্য-সহ নানা লিভারের সমস্যা দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আসে। এরই সঙ্গে রক্ত পরিশুদ্ধ করতে এবং শরীর থেকে বিষাক্ত, ক্ষতিকর উপাদান বের করে শরীর সুস্থ-সতেজ ও রোগমুক্ত রাখতে নিমপাতার রস খুবই কার্যকরী।
১৮) কুষ্ঠ রোগ নিরাময়ে নিমপাতার উপকারিতা :
এমন একটা সময় ছিল যে সময় কুষ্ঠ রোগ হলে মানুষকে সমাজ থেকে পরিত্যক্ত করা হত। মনে করা হত, এর সঠিক চিকিৎসা নেই। যার ফলে কুষ্ঠ আক্রান্ত মানুষের সংস্পর্শে এলে সেটি অপরজনের হয়ে যাবে। তাই সঠিক চিকিৎসার ব্যবস্থা না করে মানুষটিকে সমাজ থেকে বহিষ্কার করা হত। আমাদের মধ্যে অনেকেরই জানা নেই আমাদের হাতের কাছে থাকা নিমপাতাই এই রোগের পরিত্রাণের একমাত্র উপায়। গবেষণায় লক্ষ্য করা গেছে, নিম গাছের ফল ও বীজ থেকে তৈরি তেল কুষ্ঠ রোগের নিরাময়ে ব্যবহার করা যেতে পারে। নিম মিউটেজেনিক অর্থাৎ এটি কোন ব্যক্তির ডিএনএতে কোন রকমের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন ঘটাতে পারে না। তবে নিম বীজের তেল গ্রহণের আগে একটু সাবধানে থাকুন। কেননা এটির অতিরিক্ত গ্রহণের ফলে বিষাক্ত প্রভাব সৃষ্টি হয়, যা আপনার শরীরের পক্ষে ভালো নাও হতে পারে। তাই এটি ব্যবহারের আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহন করুন।
১৯)ঘামের দুর্গন্ধ দূর করতেঃ
গায়ের দুর্গন্ধ বা ঘামের দুর্গন্ধ দূর করতে নিমপাতার রস খুবই কার্যকরী একটি উপাদান।
২০) দাঁত ও মাড়ির সংক্রমণ রোধ করতেঃ দাঁত ও মাড়ির যে কোনো রকম সংক্রমণ দূরে রাখে নিম পাতা। যে কারণে নিমের মাজন ব্যবহার করা হত আগে। নিমের রস দাঁতের জন্য ভালো। মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে আর দাঁতের ফাঁকে জীবাণু বা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ রোধ করতে নিম কার্যকরী।
২১) রক্ত পরিষ্কার করে
নিম পাতার রস রক্ত পরিষ্কার করে ও শর্করার মাত্রা কমায়। পাশাপাশি রক্ত চলাচল বাড়িয়ে হৃৎপিণ্ডের গতি স্বাভাবিক রাখে। নিমের পাতা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেও রক্ষা করে।
২২)পোকা-মাকড়ের কামড়
পোকা-মাকড় কামড়ালে বা হুল ফোঁটালে নিমের শিকড় বা পাতা বেটে ক্ষত স্থানে লাগালে ব্যথা উপশম বা দূর হয়।
২৩) জন্ডিস নিরাময়ে নিম পাতার উপকারিতা
জন্ডিস হলে নিয়মিত সকালে নিম পাতার রস সাথে
মধু মিশিয়ে খালি পেটে খেতে হবে। ২৫-৩০ ফোঁটা নিম পাতার রসের সাথে মধু মিশিয়ে সকালে খালি পেটে খেলে জন্ডিস থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। জন্ডিস নিরাময়ের জন্য ১ সপ্তাহ চালিয়ে যেতে হবে।
২৪) বমি
বমি হলে নিম পাতার রস ৪-৫ ফোঁটা সাথে দুধ মিশিয়ে খেলে বমি উপশম হয়।
২৫) বাত
নিমপাতা বাতের ব্যথা সারাতে ঔষুধ হিসেবে কাজ করে। বাতের ব্যথায় নিমের তেল ম্যাসেজ হিসেবে অনেক উপকারি।